দাম্পত্য জীবনে সুখ প্রত্যাশা করেন সবাই। বিবাহিত জীবনের সুখ-শান্তির জন্য সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী সম্ভাব্য সবকিছু করার চেষ্টা করেন। দুই পক্ষকেই সামঞ্জস্য এবং সমন্বয় করতে হয়। কিন্তু যদি শুধু একজনের ঘাড়ে সবকিছুর দায়িত্ব এসে পড়ে, তাহলে সেই দাম্পত্য জীবন সুখকর হয় না। বিয়ের মাধ্যমে দুটি মানুষ জীবনের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে থাকে। প্রেমের আবেগপূর্ণ মুহূর্তগুলোর সঙ্গে বিয়ের পরের কঠিন বাস্তবতার অনেক পার্থক্য রয়েছে। সংসার জীবনে সুখী হতে গেলে আপনাকে বিয়ের পর এমন কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে যেগুলো হয়ত সম্পর্কটাকে সারাজীবন মজবুত রাখতে সাহায্য করবে।
অনেকেই বলেন, সম্পর্কের পুরনো হলে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীর সঙ্গে নাকি দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। কিন্তু প্রত্যেক দম্পতির গল্পই কি এক, নাকি কোনও কোনও দাম্পত্যে বয়স একটা সংখ্যা মাত্র! হয়তো ৫০ পেরলেও তাদের সম্পর্কে রোম্যান্সের কোনও ঘাটতি হয় না। কী সেই সিক্রেট?জেনে নিন ৫ দম্পতির সেই গল্প থেকেই-
দাম্পত্যে সম্মান থাকা জরুরি-
আমাদের দাম্পত্যের ২২ বছর হয়ে গেল। কখনও কখনও অনেক বড় অশান্তিও হয়েছে। কিন্তু কোনওদিন রাগের মাথায় একে অপরকে অসম্মান করিনি। নোংরা ভাষায় আক্রমণ করিনি। এই নিয়মটা আমরা প্রথম থেকেই মেনে এসেছি। তাই বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলেও আমাদের বন্ধুত্ব এখনও অটুট। আর আমার স্ত্রী আজও আমাকে চোখে হারান।
একে অপরের স্বপ্নপূরণের সঙ্গী-
দাম্পত্যে রোম্যান্স বজায় রাখার জন্যে একে অপরের প্রাইভেসিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। আমরা যে আলাদা দুজন মানুষ, সেই কথাটি কোনওদিন ভুলিনি। বরং সব সময় নিজস্বতাকে গুরুত্ব দিয়েছি। তার স্বপ্নপূরণের পথে পাশে থেকেছি, আবার আমার দুঃসময়েও তাকে পাশে পেয়েছি।
এক্সপেরিমেন্ট করতে ভুলিনি-
অনেকে এই কথাটি এড়িয়ে গেলেও আমরা সেই ভুলটি করিনি। দাম্পত্যে সঙ্গীকে খুশিও করতে হবে আমাদের। একে অপরের ইচ্ছে-পছন্দগুলো মিলে গেলেই সম্পর্কটা যে আরও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠবে, সে কথা আর বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। আমরা সব সময়ে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট করেছি। আজও আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা অটুট রয়েছে। আসলে ভালোবেসে সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দেওয়ায় যে ভরপুর রোম্য়ান্স রয়েছে, তা অনেকেই ভুলে যান হয়ত।
একে অপরকে সময় দিয়েছি-
আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই চাকরিরত। আর কয়েক বছর পরে আমরা চাকরি জীবন থেকে অবসর নেব। আজকাল শুনি যে, ‘সময়ের অভাবে সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে!’ একে অপরকে সময় দেওয়া নাকি সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা চাকরি সামলেছি। সংসারের দায়িত্ব নিয়েছি। ছেলে-মেয়েকে বড় করেছি। এত কিছু করার পরেও প্রতিদিন একে অপরকে সামান্য সময় দিতে ভুলিনি। দিনে ১০ মিনিট সময়ও আমাদের সম্পর্কটাকে আজও নতুনের মতো রেখেছে।
প্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছি-
সঙ্গীর সঙ্গে সুখে থাকার জন্যে তাকে আপন করে নেওয়া জরুরি। যেমন তার ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করতে হয়, তেমনই তার খারাপ বিষয়গুলোকেও গ্রহণ করতে হয়। আমি আমার স্ত্রীকে প্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছি। তার ভালো দিকগুলো গ্রহণ করেছি, সঙ্গে মেনে নিয়েছি তার ভুল-ত্রুটিও।
বয়স ৫০ পেরল, আমরা একে অপরের বন্ধু হতে পেরেছি বলেই হয়তো আজও একসঙ্গে রয়েছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন